আমাকে যদি বলা হয় আমার কাছে সবথেকে বোরিং কাজ গুলো কি কি? কয়েকটা জিনিস আমার মাথায় শুরুতেই আসবে। সেগুলো হতে পারে-
- অপেক্ষা।
- কাজ-কর্মহীন সময়।
- দিনের পর দিন একই রুটিনে জীবন পরিচালনা।
তবে যারা উচ্চশিক্ষায় গবেষণার কাজে নিয়োজিত তাদের কাছে আরও একটা বোরিং কাজ আছে। আর সেটা হচ্ছে "গবেষণাপত্র" বা "রিসার্চ পেপার" পড়া। এমন একজন নুব রিসার্চারকে পাওয়া যাবেনা যে কি না বলছে, "ওয়াও, রিসার্চ পেপার পড়া তো খুব মজার একটা ব্যাপার!"
রিসার্চ পেপার পড়া রিসার্চের একটা অবিচ্ছেদ্দ অংশ। এটা নিঃসন্দেহে একটা আর্ট। আর একটা আর্ট আপনার আয়ত্তে আনতে যে দুটি জিনিস থাকা বাধ্যতামূলক তা হচ্ছেঃ
এই দুটো জিনিস আপনার থাকতেই হবে। না থাকলে মনোবল দৃঢ় করুন, মনে করুন আপনাকে দিয়ে হতেই হবে, তারপরই শুরু করুন। পেপার পড়াটাকে আমি তিনটি ধাপে ভাগ করেছি। ধাপগুলো হচ্ছেঃ
ধাপ ০১ঃ খেলা মাত্র শুরুঃ
এটা একটা পেপার পড়ার একদম শুরুর ধাপ। প্রথমেই আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে আপনি কোন ফিল্ডের পেপার খুঁজছেন। এটা আপনার দায়িত্ব। অসংখ্য ওয়েব সাইট আছে যেখান থেকে আপনি বিনামূল্যে পেপার পড়তে+পিডিএফ কপি সংগ্রহ করতে পারবেন। আর বিনামূল্যে না পেলে আমাদের সাই-হাব তো আছেই। হাহা! তো এর পর শুরু হবে আসল কাজ। যে কাজকে আমি স্টেপ বাই স্টেপ সুডোকোডের মতন করে সাজিয়েছি।
কাজ ০১ঃ পেপারের নাম/টাইটেল পরুন। টাইটেলটা ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে?? ওকে, তাহলে সামনে এগুনো যায়। আর যদি নামটাই ভালো না লাগে তাহলে আপাতত সেই পেপার খোলার দরকার নেই। নতুন পেপার নিয়ে বসুন আর প্রথম থেকে আবার শুরু করুন।
কাজ ০২ঃ প্রত্যেক পেপারেরই এবস্ট্রাক্ট থাকবে। এবস্ট্রাক্ট মানে পুরো পেপরটার সারাংশ। এবস্ট্রাকটার এ টু জেড পড়ে ফেলুন মন দিয়ে।
কাজ ০৩ঃ এবস্ট্রাক্টের পরে আসে ইন্ট্রোডাকশন। এটাও পড়ে ফেলা যাক।
কাজ ০৪ঃ এবার আর কিছু ডিটেইলে পড়তে হবে না। শুধু প্রতিটা সেকশন আর সাব-সেকশনের শিরোনামগুলো দেখে নেয়া যাক।
কাজ ০৫ঃ ধাপ ০১ তে ম্যাথেমেটিক্যাল টার্ম পুরোপুরি এভোয়েড করুন।
কাজ ০৬ঃ কনক্লুশান টা পড়ে ফেলা যাক।
অতএব ধাপ ০১ শেষে এটা বের করুন যেঃ
গুগল থেকে কপি করা ছবি |
ওকে, বেশীরভাগের মতন আমার কাছেও পেপার পড়াটা একটা চূড়ান্ত মাত্রার বোরিং কাজ। যে জিনিসটা আমার ক্ষেত্রে হয়, খুব আগ্রহ নিয়ে একটা পেপার পড়া শুরু করলাম, তারপর হুট করে আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। রিসেন্টলি আমি মেশিন লার্নিং নিয়ে কাজ শুরু করছি। যে কোন রিসার্চের অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে ঐ ফিল্ডের প্রচুর পেপার পড়া। শুরুর দিকে পেপার পড়া নিয়ে নিদারুণ বিপাকে পড়লেও পরবর্তীতে নেটে অনেক ঘেটে ঘুটে আমি একটা মডেল দাড় করিয়েছি যেভাবে পেপার পড়া আমার কাছে আর আগের মতন বোরিং লাগেনা।
প্রিয় গুগল, আমাকে বলুন কীভাবে রিসার্চ পেপার পড়া যায়?আমি আজ আমার সেই মডেলটিই সবার সাথে শেয়ার করব। তবে শুরুর আগের একটা কথা, আমি মূলত যারা মেশিন লার্নিং বা ডেটা সায়েন্স নিয়ে কাজ করছেন তাদের জন্য ফোকাস করেছি। তবে সাধারণ কিছু পয়েন্ট সরিয়ে নিয়ে সবার জন্যই উপযোগী হতে পারে।
রিসার্চ পেপার পড়া রিসার্চের একটা অবিচ্ছেদ্দ অংশ। এটা নিঃসন্দেহে একটা আর্ট। আর একটা আর্ট আপনার আয়ত্তে আনতে যে দুটি জিনিস থাকা বাধ্যতামূলক তা হচ্ছেঃ
- সীমাহীন ধৈর্য।
- প্যাশন।
এই দুটো জিনিস আপনার থাকতেই হবে। না থাকলে মনোবল দৃঢ় করুন, মনে করুন আপনাকে দিয়ে হতেই হবে, তারপরই শুরু করুন। পেপার পড়াটাকে আমি তিনটি ধাপে ভাগ করেছি। ধাপগুলো হচ্ছেঃ
- ধাপ ০১ঃ খেলা মাত্র শুরু।
- ধাপ ০২ঃ খেলা বুঝে গেছি এবার নিজে একটু খেলি।
- ধাপ ০৩ঃ আমি এখন ঝানু খেলোয়াড়।
IMDB থেকে কপি করা ছবি |
এটা একটা পেপার পড়ার একদম শুরুর ধাপ। প্রথমেই আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে আপনি কোন ফিল্ডের পেপার খুঁজছেন। এটা আপনার দায়িত্ব। অসংখ্য ওয়েব সাইট আছে যেখান থেকে আপনি বিনামূল্যে পেপার পড়তে+পিডিএফ কপি সংগ্রহ করতে পারবেন। আর বিনামূল্যে না পেলে আমাদের সাই-হাব তো আছেই। হাহা! তো এর পর শুরু হবে আসল কাজ। যে কাজকে আমি স্টেপ বাই স্টেপ সুডোকোডের মতন করে সাজিয়েছি।
কাজ ০১ঃ পেপারের নাম/টাইটেল পরুন। টাইটেলটা ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে?? ওকে, তাহলে সামনে এগুনো যায়। আর যদি নামটাই ভালো না লাগে তাহলে আপাতত সেই পেপার খোলার দরকার নেই। নতুন পেপার নিয়ে বসুন আর প্রথম থেকে আবার শুরু করুন।
কাজ ০২ঃ প্রত্যেক পেপারেরই এবস্ট্রাক্ট থাকবে। এবস্ট্রাক্ট মানে পুরো পেপরটার সারাংশ। এবস্ট্রাকটার এ টু জেড পড়ে ফেলুন মন দিয়ে।
কাজ ০৩ঃ এবস্ট্রাক্টের পরে আসে ইন্ট্রোডাকশন। এটাও পড়ে ফেলা যাক।
কাজ ০৪ঃ এবার আর কিছু ডিটেইলে পড়তে হবে না। শুধু প্রতিটা সেকশন আর সাব-সেকশনের শিরোনামগুলো দেখে নেয়া যাক।
কাজ ০৫ঃ ধাপ ০১ তে ম্যাথেমেটিক্যাল টার্ম পুরোপুরি এভোয়েড করুন।
কাজ ০৬ঃ কনক্লুশান টা পড়ে ফেলা যাক।
অতএব ধাপ ০১ শেষে এটা বের করুন যেঃ
- পেপারের অথরের মূল লক্ষ্য কি?
- পেপারে কি কি সমস্যার সমাধান করা হয়েছে বা করার চেষ্টা করা হয়েছে?
- এই পেপারটাই কি আপনি খুঁজছিলেন?
যদি এসব সত্য হয় তাহলে এবার আপনি যেতে পারেন ধাপ ০২ - তে।
ধাপ ০২ঃ খেলা বুঝে গেছি এবার নিজে একটু খেলিঃ
ধাপ ০১ শেষের মাধ্যমে ইতোমধ্যে আপনি যে পেপার টা বাছাই করেছেন সেটা ইন ডেপথ পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। শুরু করা যাক ধাপ ০২ এর কাজগুলোঃ
কাজ ০১ঃ আবার শুরু থেকে পেপারটি পড়া শুরু করুন। এবার খুঁটিনাটি পড়তে হবে।
কাজ ০২ঃ শর্ট নোটস নেওয়া খুবই ভাল একটা জিনিস। পেপারের যে যে পার্টস গুলো আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হবে সেগুলো শর্ট নোট করে নিতে পারেন।
কাজ ০৩ঃ এবার আপনাকে ম্যাথ, গ্রাফ এবং অন্যান্য ফিগারগুলো দেখতে হবে। নিজের সল্ভ করতে হবেনা আপাতত। শুধু দেখে যান যে অথর কি কি কনসেপ্ট ব্যাবহার করেছেন।
কাজ ০৪ঃ এলগোরিদম গুলো বোঝার চেষ্টা করুন। কেন আর কীভাবে ব্যাবহার করা হল তা বুঝে নিন সম্ভব হলে।
কাজ ০৫ঃ যদি পেপারের সাথে কোন সোর্স কোড বা গিট রিপোজিটরি দেয়া থাকে তাহলে সেখান থেকে কোডগুলো দেখে আসতে পারেন। (যদি আপনি নিজে প্রোগ্রামার হন বা কোড বুঝেন।)
কাজ ০৬ঃ পেপারের সাথে দেয়া এডিশনাল রিসোর্স যেমনঃ কোন ওয়েবসাইটের লিঙ্ক, ডেটাসেটের লিঙ্ক বা অন্য কোন পেপারের রেফারেন্স ইত্যাদি ঘুরে আসতে পারেন।
ধাপ ০২ শেষ। এবার ধাপ ০৩। একটু রেস্ট নিন। গরম গরম কফি খেতে পারেন এক কাপ। তারপর আবার শুরু করে দিন।
ধাপ ০৩ঃ আমি এখন ঝানু খেলোয়াড়ঃ
ওকে, একটা পেপার পড়ার শেষ ধাপ। এই ধাপের কাজ কম তবে অনেক বেশি সময় নিতে হবে। শুরু করা যাক ধাপ ০৩ এর কজাগুলোঃ
কাজ ০১ঃ "অল এবাউট ম্যাথ" - এই স্টেজে আপনি ম্যাথের ভেতরে প্রবেশ করবেন। ইকুয়েশনগুলো নিজে নিজে সল্ভ করতে পারেন কিংবা পেপারের সলুশন গুলো নিয়েই নাড়াচাড়া করতে পারেন।
কাজ ০২ঃ আপনি যদি নিজে প্রোগ্রাম করতে পারেন তাহলে এলগোরিদমিক স্টাফগুলো নিজে নিজে প্রোগ্রাম করতে পারেন ম্যাটল্যাব, পাইথন ইত্যাদির দ্বারা।
অতএব অফিশিয়ালি পেপারটি সম্পূর্ণ পড়া শেষ হবে। বাকিটা আপনার উপর, আপনি যদি আরও কিছু আবিষ্কার করেন সেই পেপারের মাঝে আর সেগুলো নিয়ে ঘাটাঘাটির ইচ্ছে হয় নির্দ্বিধায় এগিয়ে যান। আমরা আপনার পিছনে থাকি আর নাই থাকি। হাহা!
এতক্ষনে নিশ্চই বুঝে গেছেন পেপার পড়া কতটা ধৈর্য আর প্যাশনের একটা কাজ? আর হ্যা, আপনি তখনই বুঝতে পারবেন পেপারটির সম্পর্কে আপনি পুরোপুরি জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছেন যখন আপনার মাঝে এই কনফিডেন্টটা আসবে যে আপনি অন্যদের সাথে পেপারটা নিয়ে নিজের জ্ঞান শেয়ার করতে পারবেন। কেননা নিজে যাই বুঝে থাকুন না কেন অন্যকে ভুকি চুকি বুঝাতে পারবে না।
আরেকটা টিপস, উপরের ধাপ ০১ শেষ করার পর আপনি চাইলে পেপারটা প্রিন্ট-আউট করে নিতে পারেন। কেননা হার্ড কপি পড়তে অনেক বেশি সুবিধাজনক। যাই হোক, আপনার গবেষণা জীবন হোক সুন্দর আর সাফল্যময়। ভালো থাকুন!
Happy Coding!
Comments
Post a Comment